রুপাই জসিমউদ্দীন এই গাঁয়ের এক চাষার ছেলে লম্বা মাথার চুল , কালো মুখেই কালো ভ্রমর , কিসের রঙিন ফুল ! কাঁচা ধানের পাতার মতো কচি - মুখের মায়া , তার সাথে কে মাখিয়ে দেছে নবীন তীর্নের ছায়া। জালি লাউয়ের ডগার মতো বাহু দুখান সরু , গা খানি তার শাওন মাসের যেমন তমাল তরু। বাদল-ধোয়া মেঘে কে গো মাখিয়ে দেছে তেল, বিজলি মেয়ে পিছ্লে পড়ে ছড়িয়ে আলোর খেল। কচি ধানের তুলতে চারা হয়ত কোনো চাষি, মুখে তাহার জড়িয়ে গেছে কতকটা তার হাসি। কালো চোখের তারা দিয়েই সকল ধরা দেখি, কালো দাঁতের কালি দিয়েই কেতাব কোরান লেখি। জনম কালো, মরণ কালো, কালো ভুবনময়; চাষিদের ওই কালো ছেলে সব করেছে জয়। সোনায় যে-জন সোনা বানায়, কিসের গরব তার' রং পেলে ভাই গড়তে পারি রামধনুকের হার। কালোয় যে-জন আলো বানায়, ভুলায় সবার মন, তারির পদ-রজের লাগি লুটায় বৃন্দাবন। সোনা নহে, পিতল নহে, নহে সোনার মুখ, কালো-বরন চাষির ছেলে জুড়ায় যেন বুক। যে কালো তার মাঠেরি ধান, যে কালো তার গাঁও! সেই কালোতে সিনান্ করি উজল তাহার গাও। আখড়াতে তার বাঁশের লাঠি অনেক মানে মানী, খেলার দলে তারে নিয়েই সবার টানাটানি । জারির গানে তাহার গলা উঠে সবার আগ...